আহবান
15658
wp-singular,page-template-default,page,page-id-15658,wp-theme-bridge,wp-child-theme-bridge-child,bridge-core-1.0.7,ajax_fade,page_not_loaded,,hide_top_bar_on_mobile_header,qode-child-theme-ver-1.0.0,qode-theme-ver-18.2.1,qode-theme-bridge,qode_header_in_grid,wpb-js-composer js-comp-ver-6.0.5,vc_responsive

আহবান

শুরুতে ২৪ এর গণঅভ্যুথ্বানের নিহত-আহত বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন দিয়ে শুরু করছি। প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনাদের সংগ্রামী শুভেচ্ছা এবং সফল গণঅভ্যুথ্বানের জন্য অভিনন্দন। গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আপনাদের দীর্ঘ বছরের আপোষহীন লড়াই অকৃপন চিত্তে স্মরণ করছি।

রাজনীতি হল জনগণের স্বার্থ রক্ষার সংগ্রাম, ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা এবং শাসকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার উপায়। রাজনীতি হল জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার যুদ্ধ, যেখানে শাসকের প্রতিটি প্রতিশ্রুতি জনগণের চোখে পরীক্ষা হয়, আর ন্যায়বিচারের প্রতিটি বিলম্বই শোষণের নতুন ফাঁদ।

রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জনগণের স্বার্থ, মতামত ও আকাঙ্ক্ষার সংগঠিত রূপ, যা ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করে, শাসকদের জবাবদিহির আওতায় আনে এবং রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিমালা নির্ধারণে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। দল ছাড়া রাজনীতি এক ব্যক্তির শাসনে পরিণত হয়, যেখানে গণতন্ত্র মুখোশমাত্র।

রাজনৈতিক দল জনগণের কণ্ঠস্বর, ন্যায়বিচারের হাতিয়ার এবং পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। দল ছাড়া রাজনীতি ব্যক্তিস্বার্থের খেলা, আর জনগণ তখন শুধুই দর্শক।
“রাজনীতি দলে নয়, দল রাজনীতিতে – জনগণের অধিকার সুরক্ষায়।”
“দলহীন গণতন্ত্র, শাসকের একনায়কত্বের সিঁড়ি!”
“রাজনৈতিক দল জনগণের ঢাল, শাসকের গলায় ফাঁস।”
“যে জাতি সংগঠিত নয়, সে জাতি শাসিত নয় – সে শোষিত।”
“রাজনীতি যদি যুদ্ধ হয়, তবে রাজনৈতিক দলই জনগণের অস্ত্র।”
“রাজনৈতিক দল হচ্ছে সেই প্ল্যাটফর্ম, যেখানে জনগণ স্বপ্ন দেখে, শাসকের চোখে চোখ রাখে, এবং ভবিষ্যৎ গড়ে।”
“যেখানে সংগঠন নেই, সেখানে অধিকার নেই। যেখানে অধিকার নেই, সেখানে জনগণ শুধুই প্রজা।”
“একটি সুসংগঠিত দল জনগণের আশা, আর একটি দুর্বল দল শাসকের আশীর্বাদ।”
“রাজনীতির ময়দানে দল ছাড়া জনগণ একা, আর একা মানুষ কখনোই সংগ্রাম জিততে পারে না।”

জনগণকে রাজনীতি করতে হবে কারণ ক্ষমতা কখনো শূন্যস্থানে থাকে না – আপনি যদি রাজনীতি না করেন, তাহলে অন্য কেউ আপনার ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে। তাই নিজের অধিকার, ভবিষ্যৎ এবং সম্মান রক্ষা করতে হলে জনগণকে সচেতন হতে হবে এবং নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।

কেন জনগণকে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে হবে:
নিজের অধিকার রক্ষায়:
যে জাতি রাজনীতি বুঝতে চায় না, তারা অধিকার হারায়। রাজনীতি ছাড়া জনগণ শোষিত হয়, দলবদ্ধ না হলে দাবিগুলো অগ্রাহ্য হয়।
শাসকের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে:
সচেতন জনগণই শাসকের অপশাসনের জবাবদিহি আদায় করতে পারে। রাজনৈতিক দল ছাড়া দুর্নীতি আর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সম্ভব নয়।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য:
রাজনীতি না করলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক নিপীড়িত সমাজ পাবে। সুসংগঠিত রাজনৈতিক শক্তি ন্যায়বিচার ও সাম্যের ভিত্তি গড়ে তোলে।
শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই:
রাজনীতি ছাড়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া অসম্ভব। জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে বৈষম্য দূর করা সম্ভব।
একটি নতুন বিকল্প তৈরি করা:
বর্তমান দলগুলোর সীমাবদ্ধতা বুঝে জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার
সময় এসেছে। জনমানুষের প্রকৃত স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতির নতুন ধারা তৈরি করতে হবে।
ক্যাচি এবং শক্তিশালী উক্তি:
“রাজনীতিতে উদাসীনতার মানে হলো, দুর্নীতিবাজদের বিজয় নিশ্চিত করা।”

“তুমি যদি রাজনীতি না করো, তবে অন্য কেউ তোমার ভাগ্য নির্ধারণ করবে।”
“যেখানে অন্যায়, সেখানেই প্রতিরোধ – এটাই প্রকৃত রাজনীতি।”
“নিজের নেতৃত্ব নিজেই তৈরি করো, অন্যের ওপর ভরসা করো না।”
“একটি সুসংগঠিত জনগণই প্রকৃত পরিবর্তনের মূল ভিত্তি।”

জনগণের উচিত নিজেদের স্বার্থে একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা, কারণ রাজনীতি হলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাবশালী একটি বাস্তবতা – এটি থেকে দূরে থাকা মানেই পরাধীন হওয়া।

জনগণ কেন একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল গঠন করবে বা সমর্থন করবে, তার পিছনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ডানপন্থী (রক্ষণশীল) এবং বামপন্থী (উদারপন্থী বা বিপ্লবী) দলগুলো প্রান্তিক চিন্তাধারায় আটকে রয়েছে, যেখানে সাধারণ জনগণের প্রকৃত চাহিদা ও সমস্যা উপেক্ষিত থাকে। মধ্যপন্থী দল একটি সুষম, বাস্তবসম্মত এবং
জনকল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে পারে, যা জনগণের প্রকৃত কল্যাণ নিশ্চিত করতে সক্ষম।

জনগণ কেন মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল চায়:
চরমপন্থার প্রতি বিতৃষ্ণা ও স্থিতিশীলতা চাওয়া:

ডানপন্থার কর্পোরেটবাদ এবং ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের মধ্যে সাধারণ মানুষ হারিয়ে যায়। বামপন্থার অতিরিক্ত বিপ্লবী নীতিগুলি বাস্তব জীবন থেকে অনেক দূরে থাকে। জনগণ এমন একটি দল চায়, যা পরিবর্তন আনবে কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না।

বাস্তবসম্মত সমাধান প্রয়োজন:

মধ্যপন্থী দল সমাজের বাস্তব প্রয়োজনগুলোকে রাজনৈতিক দর্শনের ঊর্ধ্বে রেখে সমাধান দিতে পারে। চরম ডান বা চরম বামের আদর্শবাদ থেকে বেরিয়ে এসে, ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন বনাম সামাজিক ন্যায়বিচার:
ডানপন্থীরা সাধারণত বড় পুঁজিপতিদের পক্ষে কাজ করে, যেখানে বামপন্থীরা কেবল পুনর্বণ্টনের ওপর জোর দেয়। মধ্যপন্থীরা একটি নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করতে পারে যা ব্যবসা ও শ্রমিকদের স্বার্থ উভয়কেই সুরক্ষিত করবে।

ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বনাম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ:
জনগণ এমন নীতি চায় যেখানে ব্যক্তি স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় ভূমিকার মধ্যে সুষম সমন্বয় থাকবে। চরম ডান ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করতে চায়, আর চরম বাম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেয়, যা জনগণের পছন্দ নয়।

জাতীয় ঐক্য ও সামাজিক সংহতি:
ডানপন্থীরা সাম্প্রদায়িকতা বা জাতীয়তাবাদে বিভক্ত করে, আর বামপন্থীরা শ্রেণিসংগ্রামে দেশকে দ্বিধাবিভক্ত করে।
মধ্যপন্থী দল জাতি, ধর্ম, শ্রেণি নির্বিশেষে সমাজের সবার জন্য কাজ করতে পারে।

যুবসমাজের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি:
বর্তমান তরুণ প্রজন্ম রাজনৈতিক আদর্শের নামে স্রেফ অন্ধ অনুসরণ চায় না; তারা বাস্তব উন্নয়ন ও সুযোগ চায়।

তরুণ সমাজ একদিকে প্রযুক্তি ও বিশ্বায়নের সুযোগ নিতে চায়, আবার সামাজিক ন্যায়বিচারও চায়—যা মধ্যপন্থা দিতে পারে।

মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাব্য মূলনীতি:
সামাজিক সুবিচার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সমন্বয়। ধর্মনিরপেক্ষ ও সহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিবেশ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সর্বজনীন বিনিয়োগ। ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য। পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নীতি।

ক্যাচি স্লোগান ও শক্তিশালী বাক্য:
“রাজনীতি আর বিভাজনের খেলনা নয়, জনগণের হাতিয়ার হওয়া উচিত।”
“অতীতের ভুল আর ভবিষ্যতের ভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে।”
“চরমপন্থার যুগ শেষ, সমন্বয়ের রাজনীতি শুরু হোক।”
“যেখানে মানুষ, সেখানেই রাজনীতি— কিন্তু ভারসাম্যই সত্যিকারের উন্নয়ন।”
“মধ্যপন্থা মানে দুর্বলতা নয়, বরং সংকটের বাস্তব সমাধান।”

সারসংক্ষেপ:
জনগণ একটি মধ্যপন্থী দল গড়ে তুলবে বা সমর্থন করবে কারণ তারা চরমপন্থা, বিভাজন এবং আদর্শিক সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি চায়। তারা একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম চায় যেখানে বাস্তবসম্মত পরিবর্তন, উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং স্থিতিশীলতা থাকবে। মধ্যপন্থী দলই পারে জনগণের স্বপ্ন ও বাস্তবতার মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে।

প্রসঙ্গ থেকে উল্লেখ করছি যে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মধ্যপন্থার একটি উদার গণতন্ত্রী দলের উথ্বানের প্রত্যাশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য থেকে। কিন্তু তা অপরিপক্ক অঙ্কুরোদগমের কারনে অংকুরেই যাত্রা ভঙ্গ হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের প্রতি শুভাকাঙ্খিদের অগ্রিম সাবধানতা ও সতর্কতা মূল্যহীন। তাদের প্রতি অনেকেরই হয়তো অনুরোধ ছিলো গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আগে জনতাকে সাথে নিয়েই সামাজিক আন্দোলন ও সংষ্কারের
কাজ শুরু করা তারপর জনগণের নিকট সংগঠক রূপে পরীক্ষিত হয়ে জনতার মাঝ দিয়ে ধৈর্য ধরে দল গড়ে তোলার। কিন্তু তাড়াহুড়া পথচলায় তারা বিপরীতে ক্রমে জনবিচ্ছিন্ন হতে শুরু করলো, পাশাপাশি বির্তকিত হতে শুরু করলো প্রতিক্রীয়াশীল একাশেংর কথা র্বাতা আর আচরনের কারণে। ৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্তরসুরীদের একটা অংশ ছদ্মবেশ নেয় ২৪এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলেনে, এবং স্বৈরাচার পতনের পর থেকেই নিত্য প্রয়োজনীয়, মৌলিক সংষ্কার বাদ দিয়ে তারা সংবিধান
সংষ্কারের নামে ৭১কে অস্বীকার, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান্তিত করা শুরু করলো। তারা ক্রমে ছদমবেশ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বৈষম্য বিরোধী জোটকে নিয়ে যেতে শুরু করলো প্রগতি নয় উগ্র ধর্মন্ধ প্রতিক্রিয়াশীল দলগুলোর কাছে। আজ ঐ প্রতিক্রীয়াশীল একাশেংর কারণে পুরো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিন্দিত হয়ে চলেছে। এ মূহুর্তে দরকার মনে করি ডান বা বাম দিকে না হেলেসোজা হয়ে দাড়ানো, সামনে এগিয়ে চলা। কিন্তু এখন দেখছি তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতৃত্ব একেবারে ভাবনার বিপরীতে। নয়া বন্দোবস্ত আর নতুন র্পাটির নামে তাদের নতুন ছদ্মবেশ সর্ম্পকে সজাগ থাকুন। বাংলাদেশকে ইরান বানাতে তারা র্ব্যথ হবে। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলেনে প্রগতিশীল অপরাংশ যোদ্ধাদের জন্য শুভ কামনা থাকছে সমসময়। সদা সর্তকতা জারি রাখুন। ২৪এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রগতিশীলরা যদি আবারও ব্যর্থ হয় তবে ধর্মান্ধ প্রতিক্রীয়াশীলরা সেই শূন্যস্থান পূরন করবে। জাতিসংঘে গৃহীত আর্ন্তজাতিক মানবধিকার সনদ ও বাংলাদেশের বাস্তবতায় সহনশীল সমাজের জন্য মধ্যপন্থার একটি উদার গণতন্ত্রী দলের প্রয়োজনীতার তাগিদে একটি দলের প্রস্তাবনা সাথে সংবিধান সংষ্কার প্রসঙ্গের ভাবনা থাকছে শেষে। যারা একসাথে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বিভিন্ন মতবাদের ধারা-উপধারা, পাহাড়ী-সমতল, নারী-পুরুষ-তৃতীয় লিঙ্গ এককথায় সকল মানুষকে, জগতের সকল প্রাণীর প্রতিনিধিত্ব করবে, সকলকে পরম মমতায় সমানভাবে ধারন করবে। আপনারা মতামতের, চিন্তার কিছুটা মিল পেলে, প্রস্তাবনাগুলো উপযুক্ত মনে হলে এর লক্ষ্য ও কর্মসূচীর সর্মথনে স্বদেশ ভাবনায় নিয়োজিত যথাযোগ্য নেতৃত্বের কাছে, কর্মীদের কাছে এই বার্তা পৌছে দিন।