১. শিক্ষা সংস্কার:
শিক্ষার বেসরকারী বাণিজ্যিকীকরণের বিপরীতে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধি; ভারসাম্যর্পূণ প্রতিযোগীতা গড়ে উঠুক।
কৃষি শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষা স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক করা।
বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষায় জোর দেওয়া।
বিভিন্ন শিক্ষা মাধ্যমের বৈচিত্র সত্ত্বেও বিয়য়ভিত্তিক একমুখি সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থায় জোর দেওয়া।
সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিল্ম-মিডিয়া বিভাগের সংখ্যা বৃদ্ধি।
২. স্বাস্থ্যসেবা:
সবার জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য উচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বীমা প্রচলন করা।
স্বাস্থ্যে বেসরকারী বাণিজ্যিকীকরণের বিপরীতে সরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধি; ভারসাম্যর্পূণ প্রতিযোগীতা গড়ে উঠুক।
৩. পরিবেশ রক্ষা:
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ।
পরিবেশবান্ধব কৃষি ও শিল্প গড়ে তোলা।
৪. নারীর ক্ষমতায়ন:
নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা রোধ।
অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করা।
৫. যুব সমাজের উন্নয়ন:
বেকারত্ব দূরীকরণ।
নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া।
উপসংহার
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক লীগ একটি স্বপ্ন, একটি অঙ্গীকার—গণতন্ত্র, সাম্য, এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ঐক্যই পরিবর্তনের মূল শক্তি।
শ্লোগান:
“গণতন্ত্র আমাদের অধিকার, সমতা আমাদের পথ, ন্যায়বিচার আমাদের লক্ষ্য। আসুন, একসঙ্গে এগিয়ে যাই।”
আমাদের যাত্রা কেবল একটি রাজনৈতিক দল গড়ার নয়, বরং একটি দেশ গড়ার। যেখানে:
প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।
শ্রমিক, কৃষক, এবং তরুণ প্রজন্ম তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পাবে।
বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা পাবে।
“দেশ আমার, অধিকার আমার, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। গণমানুষের বাংলাদেশ গড়ে তুলুন।”
আসুন, অতীতের শিক্ষাকে সঙ্গে নিয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাই। গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করি এবং জনগণের শক্তিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক লীগ—জনগণের শক্তি, গণমানুষের কণ্ঠস্বর।
—
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক লীগের রাজনৈতিক দফাসমূহ: সংস্কার ও অঙ্গীকার
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক লীগ (বিজিএল) জনগণের অধিকার রক্ষা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, এবং ঐক্যের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক, সেকুলার, এবং আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দলটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ৯০-এর গণআন্দোলন, এবং সাম্প্রতিক ২৪-এর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত। বিজিএল সকল রাজনৈতিক দলের ইতিবাচক দিকগুলো বিশ্লেষণ করে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে।
দফা ১: জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ
বিশ্লেষণ:
২০২৪-এর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এটি দেখিয়েছে জনগণের ঐক্য ও সাহসিকতা কিভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ভিত্তি তৈরি করতে পারে।
প্রতিশ্রুতি:
ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা।
রাজনৈতিক নিপীড়ন বন্ধ এবং বন্দিদের মুক্তি।
একটি গণতান্ত্রিক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত।
দফা ২: ২৪-এর আন্দোলন ও জনগণের প্রতিরোধের শিক্ষা
বিশ্লেষণ:
২৪-এর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন জনগণের ঐক্য, সাহস, এবং প্রতিরোধের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি দেখিয়েছে কীভাবে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ একটি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পতন ঘটাতে পারে।
প্রতিশ্রুতি:
জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলনের ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কারের উদ্যোগ।
ছাত্র, শ্রমিক, এবং সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য নতুন নীতিমালা।
দমননীতি বন্ধ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
সংবিধান সংষ্কার প্রসঙ্গ: ১৯৭২ খ্রী: ৪ঠা নভেম্বরে সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর প্রায় ৫২ বছর পার হলেও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলোর বাস্তবায়নে কোনরূপ পদেক্ষপ গ্রহণ তা দূরের কথা, বরং সংবিধানের গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল প্রস্তাবনার বিপরীতে অনাকাঙ্খিত অনুচ্ছেদ ও বিষয় সংশোধন ও সংযোজন-বিয়োজন করে সংবিধানের মূল চরিত্রই বদল ঘটিয়েছে, যা মূলত একদিকে যেমন অগণতান্ত্রিক, অন্যদিকে তা ১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানের সহিত সার্ঙ্ঘষিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ যা বাতিলযোগ্য। আর এ সবই করা হয়েছে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী তথা একনায়কতান্ত্রিক ধারায়। যেখানে ১৯৭২ খ্রী: গৃহীত সংবিধান এতাদিনে আরও গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল হওয়ার কথা, সেখানে সংবিধানকে অগণতান্ত্রিক ও প্রগতিবিরোধী অবস্থানে দাঁড় করানো হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভে র্ব্যাথ হয়েছে।
সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী থেকে দ্বাদশ সংশোধনী এবং চর্তুদশ সংশোধনী থেকে সপ্তদশ সংশোধনীতে সেই সঙ্গে অন্যান্য Proclamation-এ যা কিছু আছে তা সর্ম্পূণরূপে বাতিল করতে হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে যে সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে তা পরিহার করতে হবে, সংবিধান সংষ্কার করে আবারও প্রগতিমুখি করতে হবে। সেই সঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
দফা ৩: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্র গঠন
বিশ্লেষণ:
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির ভিত্তি। কিন্তু এর নাম ব্যবহার করে বিভাজন নয়, বরং একতাবদ্ধ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনই হবে আমাদের অঙ্গীকার।
প্রতিশ্রুতি:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাতিগত সম্প্রীতির ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম নিশ্চিত।
সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।
দফা ৪: গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং দলীয়করণ মুক্ত প্রশাসন
বিশ্লেষণ:
দলীয়করণ প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে। এটি বদলাতে হবে।
প্রতিশ্রুতি:
প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করণ মুক্ত সংস্কার।
নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত।
স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা।
দফা ৫: অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা
বিশ্লেষণ:
দারিদ্র্য, বৈষম্য, এবং শ্রেণিগত অসমতা বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে। অর্থনীতি হবে জনগণের কল্যাণে, শুধু মুনাফার জন্য নয়।
প্রতিশ্রুতি:
কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত।
কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা।
দুর্নীতি দমন এবং বৈষম্যহীন সামাজিক ব্যবস্থা গঠন।
দফা ৬: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরপেক্ষ কূটনীতি
বিশ্লেষণ:
বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান আমাদের জন্য সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারসাম্য এবং স্বার্থ রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিশ্রুতি:
কোনো নির্দিষ্ট দেশের প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক নেতৃত্ব গ্রহণ।
উপসংহার:
নতুন বাংলাদেশের পথে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক লীগ জনগণের শক্তি, ২৪-এর গণআন্দোলনের শিক্ষা, এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভিত্তি করে একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, এবং আধুনিক রাষ্ট্র গড়তে বদ্ধপরিকর।
শ্লোগান:
“২৪-এর শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা—নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।”
“গণতন্ত্র আমাদের অধিকার, ন্যায়বিচার আমাদের অঙ্গীকার।”
“ঐক্যবদ্ধ হই, আগামীর বাংলাদেশ গড়ি।”